তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: আসন্ন ইউনিয়ন নির্বাচনে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর আ’লীগের বর্ধিত সভায় শুক্রবার মনোনয়নপত্রসহ সকল ফাইল নিয়ে দুই চেয়ারম্যানের মধ্যে কাড়াকাড়ি এবং হাতাহাতির অভিযোগ পাওয়া
গেছে। ফাইল কাড়াকাড়ির সময় দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার জের ধরে পরের দিন শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চিতারবাজারে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আ’লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশি শেখ সাজ্জাদুর রহমান হাইসহ দুই পক্ষের ৪জনকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছে।
স্থানীয় ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেল ৪টায় দাদপুর ইউনিয়নের রাঙ্গামুলারকান্দি হাজি আব্দুল্লাহ একাডেমীর শ্রেণী কক্ষে আ’লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশিদের
মধ্যে আ’লীগের মনোনয়ন বিতরণ করা হয়। উপজেলা আ’লীগের বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকল কাগজপত্রসহ ফাইল থাকার কথা সভাপতি অথবা ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের কাছে। সভা শেষে চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি ও স্বঘোষিত সহ-সভাপতি ও  হারুন অর রশিদ এবং সাধারণ সম্পাদক ও আ’লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশি শেখ সাজ্জাদুর রহমান হাইর মধ্যে ফাইল কাড়া হয়।
ফাইল কাড়াকাড়ির সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহতির ঘটনা ঘটে। পরে উপস্থিত সকলে তাদের কাছ থেকে ফাইল উদ্ধার করে সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের হাতে তুলে দেন।
এ ঘটনায় শনিবার রাতেই আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান হাই ও ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান তানভীর অপর প্রার্থী মো. হারুন-অর রশিদের বিরুদ্ধে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
হারুন অর রশিদ বলেন, সভাপতি শেখ সাজ্জাদুর রহমান হাই ও তার ছেলে তোশার মিলে ফাইল কেড়ে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় সকলে মিলে তাদের কাছ থেকে ফাইল কেড়ে নিয়ে সভাপতির হাতে তোলে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার শ্যালক শনিবার সকালে চিতার বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করতে গেলে তাকে তোশার মারধর করার সময় বাজারে থাকা লোকজন তোশারকে মারধর করে।
সাজ্জাদুর রহমান হাইর ছেলে তোশার বলেন, হারুন অর রশিদ ও তার লোকজন ফাইল কেড়ে নিয়ে যাচ্চিল। তাদের নিকট থেকে ফাইল উদ্ধার করে সভাপতির কাছে দেওয়া হয়েছে। পরের দিন সকালে হারুন অর রশিদের শ্যালক বাবলু চিতার বাজারে লোকজন নিয়ে এসে আমাকে মারধর করে।
দাদপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, শুক্রবার বর্ধিত সভা শেষে ফাইল কাড়াকাড়ি হয়। আমি ফাইল উদ্ধার করে শুক্রবার রাতেই উপজেলা আ’লীগের নিকট পৌঁছায় দিয়েছি।
বোয়ালমারী থানার এসআই মামুন অর রশিদ বলেন, চিতার বাজারে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও ধাওয়া পাল্টা থাওয়া হচ্ছিল। পুলিশ খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।
এ সময় সাজ্জাদুর রহমান হাই সহ দুই পক্ষের ৪ জনকে আটক করে
থানায় আনা হয়েছে। আটককৃতদের ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ্ পিকুল বলেন, দাদপুর ইউনিয়নের বর্ধিত সভায় সকল কাগজপত্রসহ ফাইল কাড়াকাড়ি হয়েছে। ফাইল কাড়াকাড়ির সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ফাইল উদ্ধার করে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুল হাই আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছে। ফাইল কাড়াকাড়ি নিয়ে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সামনে সভা ডেকে সকলের মতামত নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে মোতাবেক সিদ্ধান্ত
নেওয়া হবে।